,

ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও ডিলারের নামে উঠছে সার

জেলা প্রতিনিধি, যশোর: যশোরের মনিরামপুর পৌর শহরের ব্যবসায়ী রতন কুমার পাল সব সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবারসহ ভারতে গিয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

গত বছর তিনি দেশ ছাড়লেও তাঁর নামে থাকা বিসিআইসির লাইসেন্সের বিপরীতে প্রতিমাসে সারসহ কৃষিপণ্য উত্তোলন করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কৃষি বিভাগের এক কর্মকর্তার সঙ্গে জোগসাজশে রতন পালের প্রতিনিধি বরাদ্দের লাখ লাখ টাকার সারসহ কৃষিপণ্য তুলছেন।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অভিযোগ ও সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের ব্যবসায়ী রতন কুমার পাল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে গত বছরের ৮ নভেম্বর ভারতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। মেসার্স রতন কুমার পাল নামে তাঁর বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স রয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনো লাইসেন্সধারী স্থায়ীভাবে দেশ ত্যাগ করলে তাঁর লাইসেন্স বাতিল হবে।

সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ নীতিমালা-২০০৯-এর ধারা ৮ অনুযায়ী, এসব লাইন্সেসের বিপরীতে পণ্য উত্তোলন করা আইনবহির্ভূত। তবে অভিযোগ উঠেছে, গত বছরের নভেম্বরে রতন পাল ভারতে পাড়ি জমালেও ডিসেম্বর মাস থেকে তাঁর নামে হাবিবুর রহমান নিয়মিত বরাদ্দকৃত সার ও অন্যান্য কৃষিপণ্য উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। এতে সহযোগিতা করছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার দাস।

জানা গেছে, পৌর শহরের জুড়ানপুরে সঞ্জয় কুমারের শ্বশুর বাড়ি হওয়ায় এলাকায় তাঁর প্রভাব রয়েছে। এ সুযোগ হাবিবকে সার তুলতে তিনি সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসেও ৯৫ টন সার উত্তোলন করা হয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে বরাদ্দ রয়েছে ৩১ টন। এ নিয়ে ডিলারদের মধ্যে আলোচনা শুরু হলে সঞ্জয় কুমার গত ৫ ফেব্রুয়ারি বাঘারপাড়ায় বদলি হয়েছেন।

রতন পালের নামে বরাদ্দকৃত সার উত্তোলনে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, মেসার্স রতন পালের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান রতন কুমারের স্বাক্ষরিত কাগজপত্র জমা দিয়ে পণ্য উত্তোলন করেন। হাবিবুর রহমান দাবি করেন, তিনি বৈধভাবে রতন পালের প্রতিনিধি হিসেবে সাত বছর ধরে সার উত্তোলন করছেন। তিনি কোনো অনিয়ম করেননি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহীন ইসলাম বলেন, তিনি মনিরামপুরে সদ্য যোগদান (আড়াই মাস) করায় বিষয়টি জানতে পারেননি। লিখিত অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগির তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর